Powered By Blogger

সোমবার, ২০ মে, ২০১৩

ঢাকায় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ, ‘অঘোষিত জরুরি অবস্থা’

বিরোধী দলকে আপাতত আর রাজপথে দাঁড়াতে দেবে না সরকার। আগামী এক মাস কোনো সভা-সমাবেশ করতে দেওয়া হবে না বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর গতকাল রোববার এ ঘোষণা দিলেও কার্যত ৫ মে হেফাজতে ইসলামের কর্মসূচির পর রাজধানীতে আর কোনো রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ করতে দেয়নি সরকার। এমনকি মানববন্ধনের মতো কর্মসূচির ওপরও অলিখিত নিষেধাজ্ঞা চলছে। জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের রাস্তায় মানববন্ধন কর্মসূচি আর করতে দিচ্ছে না পুলিশ।
বিরোধী দলের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হচ্ছে, সরকার দেশে অঘোষিত জরুরি অবস্থার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। বিরোধী দলের সভা-সমাবেশ ও মিছিল করা সরকার সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দিয়েছে।
গতকাল নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান বলেন, সরকার সংবিধানবিরোধী ও স্বৈরাচারী দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বিরোধী দলকে রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করতে দিচ্ছে না। 
সরকারের এ ধরনের সিদ্ধান্ত জরুরি অবস্থার শামিল বলে মনে করেন প্রবীণ আইনজীবী রফিক-উল হক। তিনি প্রথম আলোকে বলেছেন, ‘তবে আমি মনে করি, সরকার জরুরি অবস্থা জারি করার মতো কোনো বোকামি করবে না।’
সভা-সমাবেশ বন্ধ করে দেওয়া প্রসঙ্গে সরকার ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে গতকালই দুই রকম ব্যাখ্যা এসেছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গতকাল সকালে বলেছেন, যেসব দল অনুমতি নিয়ে সমাবেশ দুর্বৃত্তদের হাতে তুলে দেয় এবং জনসাধারণের ওপর অন্যায়-অত্যাচার ও জ্বালাও-পোড়াও করে, তাদের আগামী এক মাস সমাবেশ করতে দেওয়া হবে না। পরে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এ নিষেধাজ্ঞা শুধু রাজধানী ঢাকার জন্য এবং এটা সব দলের ওপর কার্যকর হবে।
আর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সরকারমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন, সাম্প্রতিক ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনার সুবিধার্থে এক মাস সভা-সমাবেশ করতে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। 
তবে এ দুটি যুক্তিকেই খারিজ করে দিয়েছেন প্রবীণ আইনজীবী রফিক-উল হক। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, কেউ নাশকতা চালাচ্ছে বা কোথাও প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলো—এ অজুহাতে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করা উচিত হবে না। কেউ জ্বালাও-পোড়াও বা নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড চালালে তার বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ আছে। আর অতীতে এর চেয়েও বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ হয়েছে। কখনো সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়নি।
সংবিধানের ৩৭ অনুচ্ছেদে বলা আছে, ‘জনশৃঙ্খলা ও জনস্বাস্থ্যের স্বার্থে আইনের দ্বারা আরোপিত যুক্তিসংগত বাধা-নিষেধ সাপেক্ষে শান্তিপূর্ণভাবে ও নিরস্ত্র অবস্থায় সমবেত হইবার এবং জনসভা ও শোভাযাত্রায় যোগদান করিবার অধিকার প্রত্যেক নাগরিকের থাকিবে।’
১৩ মে নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ কর্মসূচি দিয়েছিল বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮-দলীয় জোট। ওই দিন অনুমতি না পেয়ে তা পিছিয়ে ১৫ মে করা হয়। পরিবর্তিত তারিখেও অনুমতি না পেয়ে ওই দিন সকালে সংবাদ সম্মেলন করে ১৯ মে দেশব্যাপী হরতাল ডাকে ১৮ দল। পরে ঘূর্ণিঝড়ের কারণে সে হরতাল প্রত্যাহার করে নেয়।
পুলিশ অনুমতি বাতিল করায় গত ১৭ মে মৎস্য ভবন চত্বরে তরিকত ফেডারেশনের মহাসমাবেশ কর্মসূচি কর্মসূচি স্থগিত করে। সর্বশেষ বামপন্থী চারটি দল—জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল, নয়াগণতান্ত্রিক গণমোর্চা, জাতীয় গণতান্ত্রিক গণমঞ্চ ও জাতীয় গণফ্রন্টকে গত শনিবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ করতে দেয়নি পুলিশ।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, বিএনপির কর্মসূচি বন্ধ করার কৌশল হিসেবে সরকার সব দলের সভা-সমাবেশের ওপর এক মাসের এ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। কারণ এক মাস পার হলে, এর কিছুদিন পর শুরু হবে রমজান মাস। অর্থাৎ ঈদুল ফিতরের আগ পর্যন্ত বিএনপির পক্ষে মাঠপর্যায়ে কর্মসূচি দেওয়া কঠিন হয়ে পড়বে। 
৯ আগস্ট ঈদুল ফিতরের সম্ভাব্য তারিখ। আর ২৮ অক্টোবর থেকে আগামী ২২ জানুয়ারির মধ্যে পরবর্তী জাতীয় সংসদ নির্বাচন করার সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এ অবস্থায় নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের দাবি আদায়ে বড় আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য মধ্য আগস্ট পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল মনে করে। 
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যা বললেন
প্রথম আলোর মিরসরাই (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি জানান, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর গতকাল মিরসরাই উপজেলার দ্বিতীয় থানা হিসেবে বারইয়ারহাটের জোরারগঞ্জ থানা উদ্বোধন করেন। এরপর তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
একজন সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, ‘গণতান্ত্রিক দেশে সভা-সমাবেশ করার অধিকার সবার আছে। বৃহত্তর রাজনৈতিক দল হিসেবে আরও বেশি আছে বিএনপির। কিন্তু তাদের সমাবেশ করতে দিচ্ছেন না। এমনকি তাদের দলীয় কার্যালয়ের সামনেও সমাবেশ করতে দিচ্ছেন না। এর কারণ কী?’ জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যাঁরা সমাবেশের অনুমতি নিয়ে সমাবেশকে দুর্বৃত্তদের হাতে তুলে দেন, জনসাধারণের ওপর অত্যাচার করেন, নির্যাতন করেন, গাড়ি পোড়ান, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জিনিসপত্র নষ্ট করেন, দোকান লুট করেন, তাঁদের যুক্তিসংগত বাধা-নিষেধ সাপেক্ষে আমরা সমাবেশ করার অধিকার স্বীকার করা সত্ত্বেও আগামী এক মাস পর্যন্ত কোনো সমাবেশ কোনো দলকেই করতে দেব না।’
মন্ত্রীর বক্তব্যের স্পষ্টীকরণ 
গতকাল রাত ১১টায় ‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের স্পষ্টীকরণ’ শিরোনামে সরকারি তথ্য বিবরণী দিয়ে একটি ব্যাখ্যা দেওয়া হয়। তাতে বলা হয়, ‘আজ মিরসরাই উপজেলার জোরারগঞ্জ থানা উদ্বোধনের সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দেওয়া বক্তব্যের স্পষ্টীকরণের লক্ষ্যে জানানো যাচ্ছে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে বলেছেন, ঘূর্ণিঝড়-পরবর্তী পরিস্থিতিতে যদি কোনো রাজনৈতিক দল এমন কোনো কর্মসূচি দেয় যাতে জনগণের জানমালের ক্ষয়ক্ষতি, নিরাপত্তাহীনতা কিংবা নাশকতার আশঙ্কা থাকে বা সেরূপ লক্ষণ পরিলক্ষিত হয়, তবে দেশের আইনশৃঙ্খলা সমুন্নত রাখার স্বার্থে সেসব দলের সভা-সমাবেশের কর্মসূচি পালনের অনুমতি দেবে না সরকার।’ তথ্য বিবরণীতে আরও বলা হয়, ‘সাধারণ সমাবেশ করার ব্যাপারে কোনো আপত্তি নেই। এটা কোনো নিষেধাজ্ঞা নয়, বরং জনগণের জানমাল রক্ষার্থে পূর্বসতর্কীকরণ ব্যবস্থা। এ ব্যাপারে বিভ্রান্তির কোনো অবকাশ নেই।’ 
বিভিন্ন দলের নিন্দা
আগামী এক মাস সব ধরনের সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করার সরকারি সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন। গতকাল রোববার পৃথক বিবৃতিতে দলগুলো সরকারের এ সিদ্ধান্তকে ‘অগণতান্ত্রিক ও ফ্যাসিবাদী’ আচরণ বলে মন্তব্য করেছে।
গতকাল গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করার দাবি জানায়। একই সঙ্গে মিছিল-সমাবেশ করার অধিকার নিশ্চিত করতে ২৮ মে সচিবালয় ঘেরাও ও ২৩ মে মিরপুরে সমাবেশ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।
গণসংহতি আন্দোলনের এক বিবৃতিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে বলা হয়, সরকার তার অপশাসন-দুর্নীতি-লুটপাট ঢাকতে এবং এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ-প্রতিরোধের আন্দোলন কর্মসূচি চাপা দিতে সভা-সমাবেশের ওপর এ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এ ছাড়া সরকারের এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছে জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট ও বাংলাদেশ ছাত্রশক্তি।


http://www.prothom-alo.com/detail/date/2013-05-20/news/353602

শনিবার, ১১ মে, ২০১৩

তত্ত্বাবধায়ক সরকার চায় ৯০% মানুষ !!!



আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে সম্পন্ন করার ব্যাপারে দেশের মানুষ প্রায় একযোগে মত দিয়েছে।

প্রথম আলোর উদ্যোগে পেশাদার জরিপ পরিচালনাকারী সংস্থা ওআরজি-কোয়েস্ট রিসার্চ লিমিটেড পরিচালিত সাম্প্রতিক এক জরিপে দেখা গেছে, আগের বছরগুলোর তুলনায় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পক্ষে জনমত এখন আরও জোরালো। বেশির ভাগ মানুষ মনে করছেন, দেশের পরিস্থিতি হতাশাব্যঞ্জক। দেশের সাম্প্রতিক অবস্থা নিয়ে মানুষের মতামত যাচাইয়ের জন্য গত ৯ থেকে ২০ এপ্রিলের মধ্যে এ জরিপ পরিচালনা করা হয়।
অধিকাংশ মানুষ এ কথা মনে করছেন যে, যুদ্ধাপরাধের বিচারের দ্বিতীয় ও তৃতীয় রায় ঘোষণার পর পর উদ্ভূত পরিস্থিতি সরকার নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি। জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতি নিষিদ্ধ করার বিপক্ষেও সংখ্যাগরিষ্ঠ মত পাওয়া গেছে।
নির্বাচনকালীন সরকার, দেশের চলমান পরিস্থিতি ও এই প্রেক্ষাপটে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ, জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধকরণ, বিদ্যমান পরিস্থিতিতে সেনা হস্তক্ষেপের শঙ্কা এবং বিতর্কিত বিভিন্ন দলের সঙ্গে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর জোটবদ্ধতা ইত্যাদি বিষয়ে এই জরিপে মানুষ তাদের মতামত জানিয়েছেন। এসব মতামতে দেশের এক সংশয়পূর্ণ ছবি ফুটে উঠেছে।
জরিপটি পরিচালিত হয় দেশের প্রতিটি প্রশাসনিক বিভাগের ৩০টি জেলা শহর ও গ্রামের তিন হাজার প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের ওপর। বাংলাদেশের জনবিন্যাস অনুযায়ী উত্তরদাতাদের অনুপাত প্রতিনিধিত্বশীল রাখা হয়।
বিশ্বের বহু প্রতিষ্ঠিত গণমাধ্যম ও জরিপ পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান এ পদ্ধতিতে জনমত যাচাই করে থাকে। ইউরোপিয়ান সোসাইটি ফর অপিনিয়ন অ্যান্ড মার্কেট রিসার্চের (ইসোমার) আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত নৈতিক মানদণ্ড অক্ষুণ্ন রেখে জরিপটি করা হয়েছে।
জরিপে দেখা গেছে, দেশের বিপুলসংখ্যক মানুষ নির্দলীয় অথবা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় নির্বাচন চায়। এই দাবির পক্ষে মানুষের সংখ্যা এখন ৯০ শতাংশ। ২০১১ ও ২০১২ সালের জনমত জরিপেও মানুষের এ আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করেছিল। কিন্তু আগের জরিপের প্রায় অর্ধবছরের ব্যবধানে এর পক্ষে যথেষ্ট হারে জনমত বেড়েছে।
বেশির ভাগ মানুষ দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন। জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে অর্ধেক মানুষ বলেছে, দেশ অত্যন্ত খারাপ অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। বাকি অর্ধেকের মধ্যেও ৩৫ শতাংশ মানুষের ধারণা, দেশ খারাপ অবস্থা পার করছে। এতে করে দেখা যায়, মোট ৮৫ শতাংশ মানুষ দেশের অবস্থা খারাপ বলে মনে করছে।
বিদ্যমান পরিস্থিতিতে যে সরকার কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারেনি, এও তাদের হতাশার অন্যতম কারণ।
আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের প্রথম বর্ষপূর্তির সময় পরিচালিত জরিপে অধিকাংশ মানুষের মধ্যে এই প্রত্যাশা ছিল যে, ভবিষ্যতে হরতাল, অবরোধ ও সহিংসতায় ভরা নৈরাজ্যকর অবস্থা আর ফিরে আসবে না। পরবর্তী বছরগুলোতে তাদের এ আশাবাদে ক্রমাগত ভাঙন ধরেছে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারে কাদের মোল্লা ও দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর রায় ঘোষণার পর সারা দেশে যে তীব্র হিংসাত্মক ঘটনা ঘটে, ৭৯ শতাংশ মানুষ মনে করে, সরকার তা সামলাতে পারেনি। খুব কমসংখ্যক মানুষই বলেছে যে সরকার সুষ্ঠুভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছে। প্রসঙ্গত, ২০০৯ সালের জরিপে বিপুল সংখ্যায় মানুষ যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবি করে এবং মহাজোট সরকার এ বিচারের কাজ সম্পন্ন করতে পারবে বলে প্রত্যাশা জানায়।
এবারের জনমত জরিপে অর্ধেকেরও বেশি মানুষ জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করার বিপক্ষে মত দিয়েছে।(64.8%)
শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চের পক্ষে সমর্থন জানিয়েছে প্রায় এক-চতুর্থাংশ উত্তরদাতা। পক্ষান্তরে এর বিপক্ষে মত দিয়েছে অর্ধেকের সামান্য কিছু বেশি মানুষ। জরিপে দেখা গেছে, উল্লেখযোগ্য পরিমাণে প্রায় প্রতি পাঁচজনের একজন মানুষ গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলন সম্পর্কে জানে না।
শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চ ব্যাপক জনসমর্থন নিয়ে তাদের আন্দোলন শুরু করে। পরে প্রধান বিরোধী দলসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও গোষ্ঠী তাদের নিয়ে সমালোচনামুখর হয়ে উঠলে এবং তাদের সম্পর্কে নানা অপপ্রচার চললে মানুষের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া হয়।
বেশির ভাগ মানুষ বিতর্কিত দলের সঙ্গে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর সংস্রব ও সম্পর্ক অপছন্দ করে। অর্ধেকেরও বেশি উত্তরদাতা আওয়ামী লীগের সঙ্গে জাতীয় পার্টির এবং বিএনপির সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর জোটবদ্ধ থাকার বিপক্ষে।
বিদ্যমান পরিস্থিতিতে সামরিক বাহিনী হস্তক্ষেপ করতে পারে কি না, এ প্রশ্নের জবাবে পক্ষে-বিপক্ষে মানুষের মতামত প্রায় কাছাকাছি। তবে এর মধ্যেও কিছু বেশি সংখ্যক মানুষ মনে করে তেমন কোন আশঙ্কা নেই। বেশ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে—প্রায় প্রতি চারজনের একজন—বলেছে যে, এ ব্যাপারে তারা কিছু বলতে চায় না বা কিছু জানে না।

http://www.prothom-alo.com/imagefiles/Opinion_Poll_April_2013.pdf